এক্সপ্রেসওয়ে : যত সুবিধা

এক্সপ্রেসওয়ে : যত সুবিধা

বিশেষ প্রতিনিধি
দেশের মহাসড়কগুলোর আশেপাশে নানা স্থাপনা, হাটবাজার ও বাড়িঘর থাকায় যানবাহন বিরতিহীনভাবে নির্দিষ্ট গতিতে চলতে পারে না। ফলে গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়টি থাকে অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি নিয়েই যাত্র শুরু হয়েছে দেশের প্রথম ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। এরকম আরও কয়েকটি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।


এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে শুধু দ্রুত যাওয়া ছাড়া আর যেসব সুবিধা পাওয়া যেতে পারে, সেগুলো হচ্ছে- এতে সব ধরনের যানবাহন চলবে না, শুধু দ্রুতগতির যানবাহন চলবে। এসব যানবাহন কোথাও থামবে না। থামলেও ব্যবহার করতে হবে একটি নির্দিষ্ট লেন, যা মূল এক্সপ্রেসওয়ের বাইরে। এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলবে একটি নির্দিষ্ট গতিতে। এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা নিতে যানবাহন কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল। আর এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী যানবাহন গন্তব্যে পৌঁছে যাবে অন্য যানবাহনের তুলনায় কম সময়ে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। 


দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়েটি প্রাথমিক পর্যায়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত। এক্সপ্রেসওয়েটি। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান চলাচলের জন্য এটি খুলে দিয়েছেন। এক্সপ্রেসওয়েটি যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার ও পাচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা ৪২ মিনিট এবং ঢাকা থেকে মাওয়া ২৭ মিনিট। 


এই এক্সপ্রেসওয়েটি এশীয় মহাসড়কের অংশ। এতে গাড়ি প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য রাখা হয়েছে আটটি পথ। ঢাকার বাবুবাজার, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ, আবদুল্লাপুর, আবদুল্লাপুর সংলগ্ন টোলপ্লাজা, শ্রীনগর ফ্লাইওভার ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া মোড়ে রয়েছে এসব প্রবেশ-নির্গমন পথ। আর এক্সপ্রেসওয়ের ভেতরে কিছুদূর পর পর নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী ছাউনি-সংবলিত বাস-বে। এই এক্সপ্রেসওয়েটি চার লেনের। সঙ্গে সড়কের দুই পাশে থাকছে সাড়ে ৫ মিটার করে (একেক পাশে দুই লেন করে) দুটি সার্ভিস লেন। এগুলো দিয়ে স্থানীয় পরিবহন চলাচল করবে।


জানা গেছে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে রয়েছে ৪৪টি কালভার্ট, ১৯টি আন্ডারপাস, চারটি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু, পাঁচটি ফ্লাইওভার, দুটি ইন্টারচেইন, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটি ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার কদমতলী-বাবুবাজার লিংক রোড ফ্লাইওভার। অন্য চারটি ফ্লাইওভার করা হয়েছে আবদুল্লাপুর, শ্রীনগর, পুলিয়াবাজার ও মালিগ্রামে। এক্সপ্রেসওয়ের জুরাইন, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর ও আতাদিতে রয়েছে চারটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ এবং চারটি বড় সেতু। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে খুলনা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন   ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পৌঁছানো সহজ হবে।