তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত, রেড এলার্ট জারি

তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত, রেড এলার্ট জারি

সজিব আলম, লালমনিরহাট: উজানের ঢল, ভারি বর্ষণ ও ভারতের গজলডোবার সব কয়টি গেট খুলে দেওয়ায় লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।  ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা ও খাদ্য সংকট নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন জেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার। এদিকে ক্রমশই পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টের তীরবর্তী এলাকা গুলোতে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। 

বুধবার  (২০ অক্টোবর ) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ মিটার ২৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর ( স্বাভাবিক বিপদসীমা ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট খুলে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবা)।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকেই তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে । সর্বশেষ রাত ৯ টায় পানি বৃদ্ধি রেকর্ড করা হয় ৫২ মিটার ৮৫ সেন্টিমিটার।

এদিকে পানির বৃদ্ধির বিকল চাপে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় ফ্লাড বাইপাস ভেঙ্গে গিয়েছে । এতে নিম্ন এলাকা গুলোতে হু হু করে পানি বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যে নিম্নাঞ্চল গুলো ডুবে গিয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে । হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী মানুষজন গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাঁধ এবং বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

জানা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিঙ্গীমারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত করেছে। পানিতে ডুবে গেছে রোপা ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলি জমি। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ আবু জাফর বলেন, বন্যার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া আছে। বন্যার্তদের সহায়তা দেয়ার জন্য শুকনো খাবার পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। আমরা যথা সময়ে বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে এসব ত্রান সামগ্রী পৌছে দেয়ার জন্য কাজ করছি। 

উল্লেখ্য, ভারতের উত্তরাখাণ্ড রাজ্যে ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত পাঁচজন। রাজ্যজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িঘর, সেতু ও রাস্তাঘাট। ভূমিধসে রাস্তা আটকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজ্যের নৈনিতাল, কালাঢুঙ্গি, হলদিবানি, ভবালিসহ আরো অনেক এলাকা। সৃষ্ট এ পানির চাপ কমাতেই ব্যারাজের গেইট খুলে দিয়েছে ভারত।

বিআলো/শিলি