থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য সুখবর নিয়ে এলো এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য সুখবর নিয়ে এলো এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ২ বছরের কম বয়সী (২১ মাস) শিশুর থ্যালাসেমিয়া রোগের সুচিকিৎসা সম্পন্ন করেছে দেশের সর্বপ্রথম জেসিআই স্বীকৃত্ব হাসপাতাল, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা। থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ, যা হিমোগ্লোবিন এর জন্মগত ত্রুটির ফলে এটা তৈরী হয়। সম্প্রতি এভারকেয়ার ঢাকা’র চিকিৎসকবৃন্দ হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুটির চিকিৎসা সম্পন্ন করে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। সেই উপলক্ষ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করে।

প্রেস কনফারেন্সে হেমাটোলজি ও স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের কোঅর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহসহ উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল বাংলাদেশ এর এমডি ও সিইও ডা. রত্নদ্বিপ চাস্কার; মেডিকেল সার্ভিসেসের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ; চিফ মার্কেটিং অফিসার ভিনয় কাউল; এবং রোগীর স্বজনরা।

রোগ, চিকিৎসা প্রক্রিয়া এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, “থ্যালাসেমিয়া একটি জেনেটিক্যাল বা বংশগত রোগ। জেনেটিক্যালি বিভিন্ন ডেলিশন, মিউটিশন এর কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেশে প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত, যাদের অধিকাংশই এ সম্পর্কে অবগত নন। কারণ তাদের বেশিরভাগই বাহক বা ক্যারিয়ার যা সহজে ধরা পরে না, ফলে একে সাইলেন্ট কিলারও বলা হয়ে থাকে। এরমধ্যে ৫০ থেকে ৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগী  আছেন যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। বর্তমানে এই রোগের একমাত্র কিউরেটিভ ট্রিটমেন্ট বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ডোনার পাওয়া, কারণ থ্যালাসেমিয়া রোগীর পরিবার ছোট আকারের হওয়ায় ডোনার পাওয়ার চান্স ১০% এর নিচে। তাই এর বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় অর্থাৎ হাফ-ম্যাচ ডোনার দ্বারা ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট বা হাফ ম্যাচ ট্রান্সপ্লান্ট এমন এক পদ্ধতি যেখানে পরিবারের যে কেউ যেমন বাবা, মা, ভাই, বোন ডোনার হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর ডোনার নিয়ে আর ভোগান্তি পোহাতে হয় না।

সাধারণত শিশুর ২-৫ বছর বয়সের মধ্যেই এই ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়, তবে ২ বছরের আগেও করা যায়। দেশে প্রথমবারের মতো গত ৫ মে, ২১ মাস বয়সী শিশুর হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন করি। বাংলাদেশের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য এটি একটি বিশাল সুখবর এবং এর মাধ্যমে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা’র হাত ধরে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে বলে আমি মনে করি।”  

ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, “ব্লাড ক্যান্সার রোগীদের জন্য সকল প্রকার চিকিৎসা সাশ্রয়ী মূল্যে এভারকেয়ার হাসপিটাল ঢাকা, বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে। তাই চিকিৎসার জন্য আর বিদেশ যেতে হবেনা, একছাদের নিচে আমরা আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি । এই হ্যাপলো ট্রান্সপ্লান্ট বা হাফ ম্যাচ ট্রান্সপ্লান্ট বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতে একটি মাইলফলক।