নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কর্তৃক বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কর্তৃক বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারী পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার পথপ্রদর্শক এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মাঝে র‌্যাংকিং এ প্রথম স্থান অর্জনকারী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) আজ বৃহস্পতিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে প্রকাশিত “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক বইয়ের ভার্চুয়াল মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ তথা ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনের মহতীকালে আমাদের জাতীয় জীবনে তিনি নবরূপে আবির্ভূত হয়েছে। বছরব্যাপী ‘মুজিববর্ষ’ পালনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু আজ স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি এনএসইউ দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

তারই ধারাবাহিকতায়, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসিকে জানানোর উদ্দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির দেশ বিদেশের স্বনামধন্য ৪৭ জন লেখক ও রাজনিতিবিদদের লেখা নিয়ে “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” নামে বইটি রচনা করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের পাঠকদের কথা বিবেচনা করে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই প্রকাশিত হয়।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে রচিত “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” বইয়ের ভার্চুয়াল মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং জনসংযোগ অফিসের পরিচালক জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা: দীপু মনি, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি এম. এ. কাশেম।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ, বেনজীর আহমেদ এবং আজিজ আল কায়সার। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” বইয়ের সম্পাদক অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর উপর অনেক গুলো বই ইতমধ্যে পেয়েছি তবে আমি মনে করি যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রচিত “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” এ বইটি সেই সকল বই এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন এবং বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে পাঠে ও এটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হিসেবে বিশেষ ভাবে বিবেচিত হবে।

এই বইটি আমাদের দেশের ও বিদেশের অনেক শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী যারা বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন তেমন লেখকের লেখা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানান দিক এই বই এ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইংরেজিতে লেখা ভাল বই এর সংখ্যা খুবই কম, যে কারনে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বা আমাদের ইতিহাস বা অর্জন সে গুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচার যত হওয়া প্রয়োজন ছিল তত কিন্তু নয়।

আমাদের যত আন্তর্জাতিক মানের ইংরেজি ও বিদেশি ভাষায় লেখা হবে বা আমাদের বাংলা লেখা বইয়ের অনুবাদ হবে তত বেশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠকের কাছে আমাদের ইতিহাস পৌঁছাবে। এসব কারনেই এই বইটি অনন্য সংযোজন হবে। আমাদের বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠা, জাতীয় নেতা থেকে বিশ্বনেতা হয়ে উঠা এসব ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।

তাহলে আমরা আমাদের সত্যিকারে পরিচয় আমরা জানতে পারব। বঙ্গবন্ধু একজন কালজয়ী মানুষ ছিলেন। তিনি মানুষ এর মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ইতিহাসে তিনি শুধু জায়গা করে নেননি, ইতিহাস তিনি নির্মাণ করেছেন নিজেই। তিনিই ইতিহাস তিনিই বাংলাদেশ।

আজ বাংলাদেশের যত আগ্রগতি হয়েছে তার সব কিছুর মাঝেই বঙ্গবন্ধু এর অবদান রয়েছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম. এ. কাশেম বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুকে অনেক কাছে থেকে দেখেছি এবং চিনেছি তাঁর কাছ থেকেই অনুপ্রেরনা ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই জীবনে সফল হয়েছি। এনএসইউ সবসময় দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

এনএসইউ ১৩০০ এর অধিক মুক্তিযোদ্ধা এর সন্তানকে সম্পূর্ণ বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ করে দিয়ে সম্মানিত করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের শতবর্ষের জাতীয় উদযাপনের অংশ হিসেবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অনেক গৌরবময় উদ্যোগ নিয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায়, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসিকে জানানোর উদ্দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক বই রচনা করছে এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত কলম সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের মাঝে বিতরনের উদ্যোগে গ্রহণ করেছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে একটি "বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার" চালু করেছে। এতে মহান মুক্তিযুদ্ধের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর উপর বিপুল সংখ্যক বই এবং ছবির বৃহৎ সংগ্রহ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত গবেষণা কাজে এই কর্নারে রাখা সকল বই এবং ছবিগুলো ব্যবহার করা যাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এর সহায়তায় আয়োজিত ১০০ দিনব্যাপী "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজ" প্রতিযোগিতার এর নলেজ পার্টনার হিসেবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এই মহৎ উদ্যোগে যুক্ত থেকেছে। এসময় তিনি ভবিষ্যতে নর্থ সাউথ মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটুটেস এন্ড নার্সিং স্টাডি ইনস্টিটিউট চালু করার ঘোষনা দেন এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমতি প্রদানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। আমরা যে সকল কাজ করেছি তার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর উপর এই বই রচনা আমাদের কাছে সব থেকে বেশি গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধুকে জানার কোন শেষ নাই। এই বয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ ও দর্শন সম্পর্কে আলকপাত করার চেস্টা করেছি। অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি এই বইটি সম্পাদনার করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর শৈশব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিষয়ে আরও বিসদভাবে জানতে পেরেছি।

তিনি এদেশের অবহেলিত মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আমি ইতিহাসের ছাত্র আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু মাওসেতুং থেকেও বড় নেতা ছিলেন। যে সকল দেশে এখনো বঞ্চিত অবহেলিত মানুষ রয়েছে তারা বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস পড়ে অনুপ্রেরণা নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে। এ সময় দেশের ইতিহাস চর্চায় তিনি সবার সার্বিক সহযোগিতা কাম্য করেন।

ভার্চুয়াল মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইসমাইল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ড. এবিএম রাশেদুল হাসান, ডিন , বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, পরিচালক, দেশ বিদেশের অসংখ্য গনমাধ্যম কর্মী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তারা।

বিআলো/ইলিয়াস