মেঘনায় জাটকা ইলিশ ধরার মহোৎসব 

মেঘনায় জাটকা ইলিশ ধরার মহোৎসব 

ভোলা প্রতিনিধি : ভোলা জেলার অন্যতম শীর্ষ মৎস্য আহরণ কেন্দ্র তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে চলছে জাটকা নিধনের মহোৎসব। 

ইলিশের ভরা মৌসুমে স্থানীয় অসাধু মৎস্যব্যবসায়ীদের সাথে জোট বেঁধে চাঁদপুর থেকে আসা ভিন্ন ধাচের ইঞ্জিন চালিত নৌকার সাহায্যে চলছে ভবিষ্যতের রুপালী ইলিশ ধ্বংসের মহাযজ্ঞ। 

আর এ কাজে হরহামেশা ব্যবহৃত হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। তজুমদ্দিনের মেঘনা উপকূলের স্লুইচ গেট, চৌমুহনী, বাত্তির খাল, কাটাখালী ও মহিষখালির মাছের আড়ৎগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় ইলিশের পাশাপাশি পণ হিসেবে দেদার বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ। 

আর একটু লক্ষ্য করলেই চোখে পড়ে বাজ পাখি আঁকা অপেক্ষাকৃত ছোট ছোট নৌকায় বসে জেলেদের  কারেন্ট জাল মেরামতের অতি পরিচিত দৃশ্য। প্রতিটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা সুনির্দিষ্ট পতাকা ও প্রতীক নিয়ে পরম নিশ্চিন্তে কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা শিকার করছে। 

এ সবই চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। তজুমদ্দিন উপজেলা সদর হতে মাত্র ২শ’ মিটার পূর্বে অবস্থিত স্লুইচ গেট উপকুলে বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, প্রতি ইলিশ মৌসুমে উপজেলা মৎস্য অফিসের সাথে কয়েক লাখ টাকার অবৈধ চুক্তি হয়। আর এ টাকা উত্তোলনের জন্য একজন বিশেষ ব্যক্তি প্রতিটি আড়তের দাদন প্রদানকৃত নৌকা থেকে মাছ উত্তোলন করে নিয়মিত উৎকোচ প্রদান করে যাচ্ছে। 

এভাবেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন অবৈধ কারেন্ট জালের মাধ্যমে জাটকা ধরার কুশীলবরা। প্রশাসনের তরফে মাঝে মধ্যে খুচরা মাছের বাজারে দু’একটি লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও থামেনি সচেতন মহলের উদ্বেগ। 

একটি জাটকা ইলিশের ওজন সর্বোচ্চ ১শ’ গ্রাম। এটি পূর্ণ হলে এক থেকে দেড় কেজি হতো। এ অবস্থায় ১ হাজার টন জাটকা বড় হতে দিলে তা থেকে দশ থেকে পনেরো হাজার টন ইলিশ পাওয়া যেত। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় দূর্নীতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অফিসের অসৎ কর্মকর্তারা বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হলেও এই জাটকার জালে আটকে যাচ্ছে প্রান্তিক জেলেদের দুবেলা দু’মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন। 

স্থানীয়দের জোর দাবি, দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে এই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট অফিসের অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। তবেই রক্ষা পাবে দেশের সম্পদ রুপালী ইলিশ।